Friday, 9 December 2016

অপরিপূর্ণ ভালোলাগা

ছোট্ট একটা জেলা শহর তার মাঝে ছোট্ট একটা হোস্টেল,আর তারও মাঝে ছোট্ট একটা রুমে আমি আর আমার একজন বড় ভাই রুমমেট।

আমি সবে মাত্র (এইচ এস সি) সেকেন্ড ইয়ারে উঠেছি।

কনকনে শীতের সকাল, সূর্যি মামার এখনো দেখা মেলেনি আর মিললেও ঘন কুয়াশায় তা বোঝার উপায় নেই।

হঠাৎ ভাঙ্গাচোরা ফোনটা বেজে উঠলো, এত্ত সকালে আবার কে?? আম্মু আব্বু তো এত সকালে ফোন দেওয়ার কথা না!
ফোন তুলে দেখি অপরিচিত নাম্বার, মহা বিরক্তি নিয়ে হ্যালো বলতেই.........

- সাফাত ভাইয়া? (ছদ্মনাম)
-হুম
-ভাইয়া আমি সামিয়া (ছদ্মনাম)
কাওসার স্যার আপনার নাম্বার টা দিছেন আর বলছেন আপনার কাছে নাকি "তাপগতি বিদ্যা" অধ্যায়ের অংক গুলা করা আছে?
আর সে গুলা নেওয়ার জন্য আপনাকে ফোন দিলাম।
মেয়েটি টানা বলছেই.........।।


এই সাত সকালে হঠাৎ ঘুম থেকে উঠে পড়াশুনার কথা শুনে মাথা হ্যাং হয়ে গেছে মনে হচ্ছিলো।

ওহ হ্যাঁ...... কাওসার স্যার আমাদের পদার্থ বিজ্ঞানের টিচার। খুব বেশী ভালো ছাত্র না হলেও কেন জানি স্যার অন্য সবার থেকে আমাকে একটু বেশীই ভালোবাসতেন। কোন টপিক না বুঝলে একাই স্যারের বাসায় চলে যেতাম সেটা সকাল বা বিকেল, মাঝে মাঝে স্যারের বাসায় খাওয়া দাওয়াও হত।


চেতনা ফিরে পেয়ে বললাম...... 
-হুম আমার কাছে আছে কিন্তু খাতা টা যে কোথায় আছে খুজে দেখতে হবে, সেই ফাস্ট ইয়ারে পড়েছিলাম!!
-প্লিজ ভাইয়া একটু দেখেন না!! স্যারের দেওয়া সিট  দেখে কিছুই বুঝতেছিনা তাই স্যার আপনার কথা বলল যে আপনার খাতায় নাকি অনেক সহজ ভাবে করে দেওয়া আছে।
-হুম দেখতেছি
-ওকে ভাইয়া।

ফোন রেখে কি যেন ভাবতে ভাবতে আবার ঘুম! কিছুক্ষণ পর আবার ফোন!

-ভাইয়া পাইছেন?
-উম খুজতেছি! (মহা বিরক্তি নিয়ে)
-প্লিজ ভাইয়া দেখেন না একটু, আমি কলেজের সামনে দারিয়ে আছি আপনার খাতার জন্য।
-এখন??
-জি

এখন একটু বেশী বেশী হয়ে যাচ্ছে।এত  সকালে ঘুমই ভাঙ্গে না আবার কলেজ?? (মনেমনে)

-ওকে আমি খুজতেছি আর পাইলে আপনাকে ফোন দিচ্ছি।
-জি ভাইয়া।
  
একবার মনে হল ফোনটা বন্ধ করে আবার ঘুমাই কিন্তু কাওসার স্যারের কথা মনে হয়ে বাধ্য হয়েই বেড থেকে উঠে ফ্রেশ হলাম।

টেবিলে উপরের দিকেই খাতাটা ছিল কারন কিছু দিন আগেই ইয়ার চেঞ্জ পরীক্ষা গেছে। সকালে হোস্টেলের খাবার আমার কখনোই ভালো লাগতো না তাই বাইরেই খেতাম আজও না খেয়েই বের হয়ে সামিয়াকে ফোন দিলাম......

-কই আপনি?
-ভাইয়া আমি তো “জলযোগ এ আছি ”(শহরের বিখ্যাত রেস্টুরেন্ট), আপনি কি কলেজের সামনে?
-না, মাত্র হোস্টেল থেকে বের হলাম,
-ওকে ভাইয়া আপনি কলেজের সামনে আসেন আমিও আসতেছি,
-উম নাহ আপনি ওখানেই থাকেন আমি আসছি।
-জি ভাইয়া।

ভালোই হল খাতা টাও দেওয়া হবে আর সকালের নাস্তা টাও সারা যাবে।
কিছুক্ষণের মধ্যেই রিকশা নিয়ে আমি জলযোগের সামনে হাজির, ভাড়া মিটিয়ে ভীতরে ঢুকতেই হাবিব (হোটেল বয়) বলল কি মামা আজ এত সকাল সকাল?

-ক্যান আমি কি সকালে আসি না?
-নাহ তা না কিন্তু আপনার তো আবার সকাল হয় ১২ টায়।

হরে ভাই তুই বুঝলি কিন্তু মেয়েটা বুঝল না!! (মনেমনে)

সামিয়াকে ফোন দিতেই বলল
-ভাইয়া আপনি কি আসছেন?
-হুম আমি তো ভীতরে কিন্তু আপনি কই?
-আমি দোতলার ৬ নাম্বার টেবিলে।
-হুম ওয়েট।

উপরে উঠতেই দেখলাম ৬ নাম্বার টেবিল থেকে একটা মেয়ে আমার দিকে তাকিয়ে হাত তুলল, আমিও হাত তুলে সায় দিলাম
 কাছে যেতেই

-আপনি সাফাত??
-হুম ক্যান?? কোন প্রবলেম?
-না সেটা হবে কেন?আমি আপনাকে চিনি কিন্তু নাম জানতাম না।
-ওহ আচ্ছা, কিভাবে চেনেন?
-ভাইয়া আমি কিন্তু (এইস এস সি) ফাস্ট ইয়ার মানে আপনার থেকে ১ বছরের ছোট।
-ওহ হ্যাঁ বলো।

এর মধ্যেই হাবিব নাস্তা নিয়ে হাজির, ওরে বললাম আরেকটা নাস্তা দিতে কিন্তু সামিয়া বলল সে খাওয়া শেষ করে আমার জন্য অপেক্ষা করছে তাই সে খাবে না।

আমি খাওয়া শুরু করলাম আর মেয়েটা নিজের মনে কথা শুরু করলো,

-আমাদের ব্যাচে একটা মেয়ে আছে যে আপনাকে পছন্দ করে কিন্তু ভয়ে নাকি বলতে পারে না।
-তাই নাকি? নাম কি?
-উহু সেটা তো বলা যাবে না।
-ওকে কিন্তু আমাকে চেনে কিভাবে? বা দেখলো কিভাবে?
-কাওসার স্যারের কাছে আমাদের পড়া থাকে ৪টায় আর আপনাদের ৪টায় পড়া শেষ হয় আর বের হওয়ার সময় আপনাকে দেখেছে ও। 
-ওহ আচ্ছা বাদ দাও, তোমার কোন চ্যাপ্টার টা যেন লাগবে? (একটু লজ্জা পেয়ে টপিক চেঞ্জ করলাম)
- তাপগতি বিদ্যা।
-শুধু এটাই?
-নাহ ভাইয়া “ভেক্টর” চ্যাপ্টারেও একটু প্রবলেম আছে, আপনি কি একটু রিভিউ দিয়ে দিবেন?
-এখন?
-হুম কেন কোন প্রবলেম?
-উম তা না, আচ্ছা নাস্তা টা শেষ করি?
-ওকে।

খাওয়া শেষে প্রায় ৩৫-৪০ মিনিটের মধ্যে ২টা অধ্যায়ের অংক গুলা মোটামুটি রিভিউ দিয়ে দিলাম।
শেষে সে বলল......
-বুঝছি ভাইয়া কেন কাওসার স্যার আপনাকে এত চয়েজ করে।
-আরে না এমন কিছু না, এই সাবজেক্টটা একটু ভালো লাগে তাই এটাই বেশী পড়ি আর সে জন্য একটু আধটু পারি আর কি!
-হুম বুঝলাম।

সব শেষে সে বলল আচ্ছা চলেন উঠি, আমার আবার হোস্টেলে যেতে হবে,
-তুমি কি হোস্টেলে থাকো?
-জি ভাইয়া, “রাবেয়া” ছাত্রি হোস্টেলে।
-ওহ আচ্ছা।


নাস্তার বিল দিয়ে দুজনই নিচে নামলাম, নিচে নেমে ওকে একটা রিকশায় তুলে দিলাম আর সে বলল অংক গুলা নোট করে ২-৩ দিনের মধ্যে আমার খাতা ব্যাক দিবে।
আমি ও সায় দিয়ে আরেকটা রিকশা নিয়ে হোস্টেলের দিকে রওনা হলাম......।।

রিকশায় বসে কাওসার স্যার কে মনে মনে একটা ধন্যবাদ দিলাম, স্যার নাম্বার না দিলে আজ সামিয়ার সাথে পরিচয় হত না। 

মেয়েটার মধ্যে কি যেন একটা আছে যা আমি অন্য মেয়েদের মধ্যে দেখিনি।
হরিনের মতো চোখ,জিরাফের মতো লম্বা, মায়াবি মুখ এগুলো হয়তোবা হবে না কিন্তু আশ্চর্য রকমের একটা সৌন্দর্যতা আছে,
আর সব থেকে বেশী আকর্ষণীও ওর ফ্রাঙ্কলি কথা বলার ধরন।

সবকিছুই ঠিকঠাক ছিল কিন্তু ওর কোন ফ্রেন্ড আমারে মনে মনে পছন্দ করে ঝামেলাটা বাধাল, যাইহোক মনে মনে করে প্রকাশে তো আর বলে নি!!

এমন অনেক কিছু ভাবতে ভাবতেই হোস্টেলে চলে আসলাম কিন্তু সামিয়া যেন মনের মধ্যে যেকে বসেছে! কোন ভাবেই ওর কথা মাথা থেকে ঝারতে পারছি না!!


সত্যি কথা বলতে এক প্রকার ভালোলাগা কাজ করতে ছিল, জানি না এটা “লাভ এট ফার্স্ট সাইট” কিনা তবে সত্যিই মনের মধ্যে অন্য রকমের ভাললাগা কাজ করছিলো। মনে মনে ভাবলাম আমার খাতা যেহুতু ওর কাছে আছে তাই সেটাকে উদ্দেশ্য করে ফোন দেওয়া যাবে বা ও নিজেই ফোন দিবে।


এভাবে ভাবতে ভাবতে ১দিন চলে গেলো আর পরের দিন ভাবলাম ফোন দিবো কিন্তু কি মনে করবে এই ভেবে আর ফোন দেওয়া হয়নি।

এভাবে ৩দিন ফোন না দিয়ে ভাবলাম ওর নোট করা শেষ হলে নিজেই ফোন দিবে কিন্তু চতুর্থ দিনেও ওর ফোন না পেয়ে সন্ধায় আমিই ফোন দিলাম, কিন্তু ফোন বার বার বন্ধ দেখাচ্ছিল।
এভাবেই ২দিন ফোন দিলাম কিন্তু ২দিনি ফোন বন্ধ, তখন আর আমার মধ্যে খাতার কথা নেই শুধু ভাবছিলাম ওর ফোন বন্ধ কেন?


পরের দিন কাওসার স্যারকে সামিয়া এবং খাতার কথা খুলে বললাম, স্যার বলল ওই মেয়ে তো আমার কাছে গত ২দিন পরতে আসেনি, হয়তোবা কোন প্রবলেম তাই আসছে না।

আমিও আর স্যারের সাথে কথা না বারিয়ে টপিক চেঞ্জ করলাম আর ভাবতেছিলাম যে ফোন বন্ধ থাক কিন্তু কলেজে বা প্রাইভেটে তো সে আসবেই।


এভাবে প্রায় ১৭-১৮ দিন পার হল কিন্তু সামিয়ার ফোন ও বন্ধ আবার স্যারের কাছে পরতেও আসে না। আর এ দিকে তো আমি চিন্তায় শেষ!

শেষ পর্যন্ত কোন উপায় না পেয়ে সেই ৪টার ব্যাচের মেয়েদের সামিয়ার কথা জিগ্যেস করলাম।
ওরাও নাকি সামিয়ার কোন খবর জানে না আর গত কিছুদিন ধরে দেখাও হয় না।

আমার মনে তখন একটাই প্রশ্ন মেয়েটা কি হাওয়া হয়ে গেলো?

সত্যি কথা বলতে খাতার জন্য একটা বারও ফোন দেইনি বা খবর নেই নি, কিন্তু কি জন্য খবর নিছি সেটাও বলতে পারব না।  তবে এটুকও বলতে পারি কেন জানি ওকে খুব দেখতে ইচ্ছে হচ্ছিলো.........হয়তোবা ভাললাগা বালবাসা বা অন্য কোন কারনে!!


যখন কলেজ পাশ করে ভার্সিটিতে ভর্তি হয়ে স্যারের সাথে দেখা করতে গেছি তখনও স্যারকে জিগ্যেস করেছিলাম সামিয়ার কথা কিন্তু স্যারও নাকি তারপর থেকে ওকে আর কলেজে বা প্রাইভেটে দেখেনি এমনকি ওর বান্ধবীদের থেকেও কোন খবর মেলে নি!!

গত ৩বছরে ভার্সিটি বা বাইরে অনেক মেয়ে দেখেছি কিন্তু সামিয়ার মতো কাওকে পাইনি যাকে প্রথম দেখাতেই ভালো লাগে।

কখনো ওকে ফিরে পেলে একটা চর দিয়ে জিগ্যেস করতাম খাতাটা নিয়ে কেন হারিয়ে গেছিলা? তোমার জন্য আমার আবার নতুন করে নোট করতে হইছে আর সাথে অনেক কষ্ট!!

কোথায় যেন পরেছিলাম  “দ্বিতিও দেখায় প্রণয় নিশ্চিত বলে 

প্রথম দেখাই শেষ দেখা রয়ে যায়”  

আজও মনে মনে সামিয়াকে খুজি কিন্তু নোট খাতার জন্য না...............ভালোলাগা টাকে ভালবাসায় রূপান্তরিত করার জন্য।।

Wednesday, 30 November 2016

রিকশাওয়ালা মামা

কটা মানুষের যদি স্বপ্ন না থাকে তাহলে সে বেচে থাকে কি আশায়,কি নেশায়?
একটা মানুষ প্রতিদিন স্বপ্ন দেখবে আর সেই স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করার আশায় তার পিছু ছুটবে এটাই তো স্বাভাবিক তাই না?

আচ্ছা একবার ভাবুনতো যে আপনার কোন স্বপ্ন নেই তাহলে আপনি কেন বেচে আছেন আর ঘুম থেকে ওঠারই বা কি দরকার?

পৃথিবীর প্রত্যেকটা মানুষেরই স্বপ্ন আছে সে হতে পারে নেতা, ব্যবসায়ী, চাকুরিজীবি, দিনমজুর,কিংবা ছাত্র। কিন্তু সবার স্বপ্নই কি সমান? 
না সবার স্বপ্নই সমান হয় না।

কারো স্বপ্ন অনেক অনেক অনেক বড় আবার কারো স্বপ্ন অতি ছোট কিন্তু কেন? 
স্বপ্ন দেখতে তো পকেটের টাকা যাচ্ছে না তাহলে সবার স্বপ্ন সমান হয় না কেন?


ধরুন মধ্যবিত্ত পরিবারের একজন ছাত্র, তার স্বপ্ন সেও একদিন তার নিজের সাইকেলে করে স্কুলে যাবে কারন সে প্রতিদিন পায়ে হেটে স্কুলে যায়। আবার এমনি একটা ছাত্রের ইচ্ছে বাইসাইকেল তো অনেকদিন হল এবার একটা মোটর বাইক কিনতে হবে। 
আবার একজন বড় ব্যবসায়ীর স্বপ্ন এই টয়োটাতে আর কত দিন সামনে বছর একটা মার্সিডিজ হলে ভালো হয়। এমনি ভাবে স্বপ্ন গুলাও সামাজিক অবস্থান অনুযায়ী ডিপেন্ড করে।

কিন্তু ভাবুনতো একটা মধ্যবয়স্ক অতি সাধারণ রিকশাওয়ালার কি স্বপ্ন থাকতে পারে??
এই মাসটা রিকশা চালায়ে একটা মোটর বাইক বা প্রাইভেট কার কিনবো? 
নাকি মাটির বাড়িটাকে দালান বানাবো! কোনটা??

পার্সোনালি আমার পছন্দের যানবাহনের মধ্যে রিকশা অন্যতম আর রিকশায় উঠে রিকশাওয়ালা মামাদের সাথে গল্প করতে আমি বরাবরই পটু, আর সে সুবাদেই ঢাকার রিকশাওয়ালা মামাদের সম্পর্কে কিছু ধারণা আমার হয়েছে। যেমন তারা ভাড়া রিকশা চালালে ফুল বেলা বা হাফ বেলা কত টাকা দিতে হয় মালিক কে, আবার তাদের থাকা খাওয়া সহ প্রতিদিন কেমন খরচ হয়, সারাদিন কেমন ইনকাম হয়, আরও অনেক কিছুই।


আবার অনেক ধান্দাবাজ রিকশাওয়ালাও দেখেছি যাদের বেশী ভাগই বলে তাদের মেয়ের বিয়ে বা ছেলে-মেয়ের স্কুলে ভর্তির টাকা নাই, এমন অনেক কথা বলেই সাধারণ যাত্রীদের থেকে সিম্পেথি পাওয়ার চেষ্টা করে। 


এমনি ভাবে একবার ভার্সিটি থেকে বাসায় যাওয়ার জন্য ২১-২২ বছরের একটা ছেলের রিকশায় চেপে বসলাম। যথারীতি গল্প শুরু করলাম, তার বাসা ছিল দিনাজপুরে আর নামটা ঠিক মনে নাই। বললাম মামা ঢাকায় কতদিন রিকশা চালাও?
-সে বলল মামা আমি আসলে রিকশা চালাই না, দিনাজপুরের একটা বেসরকারি পলিটেকনিকে পড়ি আর তার টাকা যোগাড়ের জন্য কিছু দিন হল ঢাকায় রিকশা চালাচ্ছি!!!  

তার কথাটা শুনে নিজের কাছেই নিজেকে ছোট মনে হচ্ছিলো কারন আমার বয়সী একটা ছেলে রিকশা চালিয়ে নিজের পড়াশুনার খরচ চালাচ্ছে আর আমি বাবার টাকা ছাড়া এখনো অন্ধ...।।  
যাইহোক তাকে কিছু প্রশংসা বাক্য শুনিয়ে জিজ্ঞেস করলাম মামা কোন সাবজেক্টে পড়েন আর খরচ কেমন?
-তার উত্তর ছিল মামা ইংরেজি সাবজেক্টে পড়ি আর খরচ ভালোই যায়!!! 

তার উত্তর শুনে আমি স্থির হয়ে গেলাম......... পলিটেকনিকে আবার ইংরেজি ডিপার্টমেন্ট!!!
শেষ পর্যন্ত রিকশা থেকে নেমে শুধু বলেছিলাম,মামা এখন থেকে কেও জিজ্ঞেস করলে বলবা কম্পিউটার সাইন্সে পড়ি।



তাইবলে সবাই কিন্তু এমন না, এত মামাদের ভিড়ে হাতেগোনা কিছু মামা এমন থাকবেই। আর আরও ভালো করে ভাবলে দেখা যাবে এরাও অনেক ভালো কারন কিছু টাকা বেশী পাওয়ার আশায় একটু মিথ্যা বলে মানুষের সিম্পেথি পাওয়ার চেষ্টা মাত্র, আপনার ইচ্ছে হলে দিবেন আর না হলে দিবেন না।  কিন্তু চোর বাটপার রা?? 

তবে একটা বিষয় দেখেছি, যত রিকশাওয়ালা মামার সাথেই গল্প করেছি কেউ বিরক্ত হয়নি বরং খুশিই হয়।


যাইহোক বেশ কিছুদিন আগে খুব কাছের একটি বন্ধুর জন্মদিন সেলিব্রেশন করার জন্য তার বাসার দিকে যাচ্ছিলাম ৭-৮ জন মিলে, যাওয়ার সময় যেটা দেখলাম ধানমন্ডির আবাহনী মাঠের উত্তর পাশের ফুটপাত, একজন ৪৫-৫৫ বছরের চাচা একটা ভ্যানের উপর কিছু প্লেট আর একটা ভাতের পাতিল নিয়ে বসে আছে আর রাস্তার উপর বেশ কিছু খালি রিকশা দাঁড়ানো, কাছে যেতেই দেখলাম সবগুলা প্লেটে কিছু পরিমান খিচুরি ভাত সাজানো আর পাশের একটা প্লেটে শুকনা মরিচের সাথে পিয়াজ আর তেল দিয়ে ভর্তা, আর একটা ছোট্ট পাতিলে ডিম রান্না করা। 

কৌতূহল নিয়েই জিগ্যেস করলাম চাচা কত করে প্লেট? 
চাচার সরল উত্তর মরিচ ভর্তা নিলে ১৫টাকা আর ডিম নিলে ২৫টাকা। তো দাম শোনার পর একটু দাঁড়িয়ে দেখতেছিলাম নিম্নমধ্যবিত্তের উদাহরণ
আশ্চর্যের বিষয় সেখানে প্রায় ১০-১২ জন রিকশাওয়ালা  একসাথে খাবার নিল এবং সবাই ডিম ছাড়া মানে ১৫টাকার খিচুরির সাথে মরিচ ভর্তা!!

খাওয়ারের পরিবেশটা এমন যে কোন দেওয়ালের সীমানা নেই,চারিদিকে খোলা,রাস্তা দিয়ে হরদম গাড়ি চলাচল, এমনকি বসার মতো একটা টুল ও নেই, যার যার রিকশায় সে সে বসে খাচ্ছে।


আমার জানামতে ঢাকা শহরের একজন রিকশাওয়ালা সারাদিন রিকশা চালালে সর্বোচ্চ ৫০০-৭০০ টাকা ইনকাম করতে পারে, আর এর মধ্যে তার রিকশার জমা টাকা, তার থাকা, খাওয়া এবং একটা মানুষের নিত্য প্রয়োজনীয় কিছু জিনিসের ও দরকার হয় তাতে সব মিলে কি এই টাকাটা যথেষ্ট?  
আবার তাদের যে হাড়ভাঙ্গা খাটুনি তাতে করে ভর দুপুরে এই মরিচ ভর্তা দিয়ে ১ প্লেট খিচুরি খেয়ে কি রিকশা চালানো সম্ভব?

তাও মনে হয় সম্ভব ১টা ডিম দিয়ে দুই প্লেট ভাত খাওয়া কিন্তু দিন শেষে তাদেরও একটা পরিবার আছে যারা সবসময় সেই অতি সাধারণ রিকশা চালকের রোজগারের দিকে তাকিয়ে থাকে আর হয়তোবা এই ভাবনাতেই শুকনো মরীচ ভর্তা দিয়ে ভাত খেয়েও হাসা যায়!!!


আচ্ছা একবার ভাবুনতো আমার আপনার ১৫টাকা দিয়ে কি ১বেলা খাওয়া হবে?
আপনি কি পারবেন এই মরিচ ভর্তা দিয়ে খেয়ে সারাদিন এমনি থাকতে? রিক্সা নাহয় নাই চালালেন।  

তাহলে কী বলবো?? তারা কী মানুষ না?? হ্যাঁ তারাও মানুষ কিন্তু গরিব মানুষযাদের স্বপ্ন হয় রঙ বিহীন ফ্যাকাসে! যারা যাত্রীর থেকে ২-৫ টাকা বেশী নিয়ে বাড়ি গাড়ি করে না বা ভালো কোন রেস্টুরেন্টে গিয়ে চেক-ইন  ও দেয় না, তারা হল সেইসব মানুষ যারা নিজেরা রংচটা স্বপ্ন দেখে ঠিকই কিন্তু নিজের স্বপ্ন বিসর্জন দিয়ে আরেক জনের স্বপ্ন রঙ্গিন করার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করে।

ভাবছেন তারা আবার কিভাবে আরেকজনের স্বপ্ন রঙিন করে? কখনো কি দেখেছেন কোন রিকশাওয়ালা বলেছে তার ছেলেকে সে রিকশা চালক বানাবে? সেই রিকশাচালক ও স্বপ্ন দেখে কিন্তু নিজেকে নিয়ে না তার সন্তান্দের নিয়ে।

 আর অনেক বেশী হাড়ভাঙ্গা খাটুনি করেও তাদের স্বপ্ন হয় অনেক ছোট।


          ভালো থাকুক মামা গুলা......ভালো থাকুক তাদের পরিবার 

Saturday, 26 November 2016

মেসি না রোনালদো?

নালদিনহ  এবং জিনেদিন জিদান যুগের পরই ফুটবল বিশ্বে এই দুটি নাম সব থেকে বেশী উচ্চারিত হচ্ছে। কে সেরা? কেওবা মেসির জন্য গলা ফাটাচ্ছে আবার কেও বা রোনালদোর জন্য

ফুটবল দুনিয়া ক্রিকেটের মতো না, সেখানে একটা দেশ আরেকটা দেশের সাথে প্রিতি ম্যাচ খুব কমি খেলে আর সে জন্য সমর্থকদের গলা ফাটাতে হয় পছন্দের ফুটবলারের ক্লাবের জন্য কারন সারা বছর তারা সেখানেই ব্যস্ত থাকে। তবে খেয়াল করলে একটা মজার জিনিস লক্ষ করা যায় সেটা হল ব্রাজিল সমর্থকরা বেশিভাগই রিয়াল মাদ্রিদ সাপোর্টার আবার আর্জেন্টিনা সমর্থকরাও বেশিভাগই বার্সেলোনা সাপোর্টার। কারন হিসেবে বলতে পারি মেসি না হয় বার্সেলোনায় খেলে তাই তারা বার্সেলোনার সাপোর্টার কিন্তু ব্রাজিলের রিকারডো কাকা ছারা তো বড় কোন তারকা গত অনেক বছরি রিয়াল মাদ্রিদে নেই তাহলে?? এটারও একটা ভালো কারন মনে হয় মেসি যে ক্লাবে খেলে সেই ক্লাবের সাপোর্টার একজন ব্রাজিল ফ্যান!! ক্যামনে সম্ভবব?? 

এবার ফিরে আসি আমার লেখার বিষয় মেসি না রোনালদো তে............ 



লিওনেল মেসি তার ক্লাব ক্যারিয়ারে অনেক অনেক ট্রফি জিতেছেন আর তার ক্লাব কেরিয়ারও অনেক সমৃদ্ধ।
একজন ফুটবলার কোন একটা ক্লাবের হয়ে ৫টা লা-লিগা, ৩টা চ্যাম্পিয়ন লিগ ৫টা বেলন্ডিওর জেতাটা মুখের কথা না, তার ড্রিবলিং এবং বা পায়ের কারুকাজ দেখলে যে কোন ফুটবল প্রেমীই আচ্ছন্নও হবে। তার নমনীয়তা এবং শান্তশিষ্ট ব্যাবহারের জন্য ও সে বিখ্যাত
কিন্তু খটকাটা লাগে যখন এই মেসিই তার দেশের ফুটবলের জন্য মাঠে নামে, হ্যাঁ মেসি আর্জেন্টিনার হয়ে বিশ্বকাপে রানার আপ হইছে আবার কোপা অ্যামেরিকাতেও কিন্তু প্রশ্নটা হল পৃথিবী কি কখনো রানার আপ কে মনে রাখে?  না......সবাই সুধু চ্যাম্পিয়ন কেই মনে রাখে।

আপনি যদি কোন আর্জেন্টিনা সমর্থককে জিগ্যেস করেন যে মেসি তো বার্সেলোনার হয়ে চমৎকার খেলে কিন্তু নিজ দেশের হয়ে এত্ত ফ্লপ ক্যান? তাহলে তার উত্তর হবে সেই দুটি রানার আপ হওয়ার গল্প আর অবশই ব্রাজিলের বিপক্ষে একটা ম্যাচে হ্যাট্রিক করেছিল সেই গল্প, কিন্তু কোন ট্রফি জেতার গল্প আপনি তাদের থেকে পাবেন না। 

প্রস্নটা না আমার .........যে মেসি ক্লাবের হয়ে এত্ত সফল সেই মেসিই কেন নিজ দেশের হয়ে বার বার বেরথ? প্রশ্নটা আরও কঠিন হয় যখন আগুয়েরও,হিগুয়েন,ডি-মারিয়া,মাচেরানোর মতো সুপার স্টার রা তার সাথে খেলে। এই প্রশ্নের উত্তর হয়তোবা খোদ মেসিই ভালো বলতে পারবেন। 
কিন্তু হঠাৎ গত কিছুদিন ধরে খেয়াল করছি আর্জেন্টিনা খারাপ করলেই হিগুয়েনের দোষ আর ভালো করলেই মেসি!!! এমনকি একটা গোলে এসিস্ট করলেও মেসির ছবি হেডলাইন আর হারলেই শুধু হিগুয়েনের গুষ্টি উদ্ধার করা হয়। যাইহোক বিষয়টা এখনও মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে।


ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো.........সেও তার ক্লাবের প্রান ভোমরা, গত ছয় মৌসুম লা-লিগায় কমপক্ষে ৩০ টা করে গোলের রেকর্ড করে সেটা সে বুঝিয়েও দিছেন। কিন্তু খেলার পাশাপাশি সে বেফাঁস সব মন্তব্য বা কর্ম ক্যান্ডেও অনেক সময় সংবাদের শিরোনাম হয়েছেন। যেমন “আমিই সেরা তাই সবাই আমাকে হিংসা করে” আরও অনেক কিছু।
২০০৯ সালের ২৬ জুলাই রেকর্ড ট্রান্সফারে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড থেকে রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দেন তিনি। আর সে সময় ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের ম্যানেজার ছিলেন সের অ্যালেক্স ফারগুসন,আর তার হাতেই মুলুত আজকের রোনালদোর রোনালদো হয়ে ওঠা।
ক্লাব ক্যারিয়ারে ৩ টা লা-লিগা ২ টা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ৩টা বেলন্ডিওর সহ আরও অসংখ্য ট্রফি তিনি জিতেছেন।


ক্লাব ক্যারিয়ারের মতো নিজ দেশ পর্তুগালের হয়েও তার রেকর্ড বেশ সমৃদ্ধ, ২০১৪ বিশ্বকাপের কোয়ালিফায়ার রাউন্ডের শেষ ম্যাচে সুইডেনের সাথে ৩ গোল করে একাই পর্তুগালকে বিশ্বকাপে তোলেন, আর সেই ম্যাচটায় পর্তুগালকে কমপক্ষে ৩-০ বেবধানে জিততে হত আর সেই ৩টা গোলী রোনালদো করেছিলেন।
সর্ব শেষ ২০১৬ সালের ইউরো তে ফ্রান্সকে হারিয়ে পর্তুগাল চ্যাম্পিয়ন হয় রোনালদোর নেতৃত্বে আর এটাই একমাত্র পর্তুগালের কোন বৈশ্বিক শিরোপা যদিও ফাইনাল ম্যাচে সে আঘাত পেয়ে মাঠের বাইরে ছিটকে যায় কিন্তু তার অবদান ছিল অনস্বীকার্য। যদিও পর্তুগাল দলে তার সাথে আগুয়েরও,হিগুয়েন,ডি-মারিয়া,মাচেরানোর মতো সুপার স্টারদের নাম নেই কিন্তু নানি,পেপে দেরও ভালো পরিচিতি আছে। 

তবে এটা সত্যিই স্বীকার করতে হয় যে আজ মেসি রোনালদোর মতো ফুটবলার আছে জন্যই ফুটবল এত সুন্দর আর এত প্রতিদ্বন্দ্বিতা, আর আমার মনে হয় পৃথিবীর প্রত্যেকটা ফুটবল্প্রেমিই তাদের এই দ্বৈরথ উপভোগ করেন এবং বিনোদিত হয়।

একবার ভাবুনতো পৃথিবীতে মেসি বা রোনালদোর মতো ফুটবলার নেই তাহলে সাধারণ ফুটবল প্রেমিরা কাদেরকে নিয়ে এত গলা ফাটাবেন??

পরিশেষে বেক্তিগত ভাবে বলতে পারি যে মেসি সত্যিই অসাধারন তার ড্রিবলিং এবং বা-পায়ের কারুকাজের জন্য কিন্তু এই মুহূর্তে পৃথিবীর স্মার্ট স্টাইলিশ ফুটবলারটি ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো।। 




Monday, 21 November 2016

My First post

Hello World,

I am Maruf Khan, a young dreamers from middle-class family who loves to dream and Tries to fulfill. Dream a lot about myself and my surroundings, I prefer to live in peace with all, 
The country and society to do a lot of good dream i have, Despite the many obstacles I'm trying to,


From an early age to love cricket and love to talk about cricket,
I'm a die hard fan of the Bangladesh cricket team, and outside they seemed like the team playing well,
Khan_Maruf

Bangladesh Cricket Team


From an early age to think about myself and society, and from there Wrote in my diary, Now write to blog and I would like to develop more of my own thoughts,

If I could be the middle class to upper middle class can ever then I want to do many thing about the neglected street children,
And it is a big dream for me and i must succeed one day.........Insha-Allah :) 

Neglected street children