রনালদিনহ এবং জিনেদিন জিদান যুগের পরই ফুটবল বিশ্বে এই দুটি নাম সব থেকে বেশী উচ্চারিত হচ্ছে। কে সেরা? কেওবা মেসির জন্য গলা ফাটাচ্ছে আবার কেও বা রোনালদোর জন্য,
ফুটবল দুনিয়া ক্রিকেটের মতো না, সেখানে একটা দেশ আরেকটা দেশের সাথে প্রিতি ম্যাচ খুব কমি খেলে আর সে জন্য সমর্থকদের গলা ফাটাতে হয় পছন্দের ফুটবলারের ক্লাবের জন্য কারন সারা বছর তারা সেখানেই ব্যস্ত থাকে। তবে খেয়াল করলে একটা মজার জিনিস লক্ষ করা যায় সেটা হল ব্রাজিল সমর্থকরা বেশিভাগই রিয়াল মাদ্রিদ সাপোর্টার আবার আর্জেন্টিনা সমর্থকরাও বেশিভাগই বার্সেলোনা সাপোর্টার। কারন হিসেবে বলতে পারি মেসি না হয় বার্সেলোনায় খেলে তাই তারা বার্সেলোনার সাপোর্টার কিন্তু ব্রাজিলের রিকারডো কাকা ছারা তো বড় কোন তারকা গত অনেক বছরি রিয়াল মাদ্রিদে নেই তাহলে?? এটারও একটা ভালো কারন মনে হয় মেসি যে ক্লাবে খেলে সেই ক্লাবের সাপোর্টার একজন ব্রাজিল ফ্যান!! ক্যামনে সম্ভবব??
এবার ফিরে আসি আমার লেখার বিষয় মেসি না রোনালদো তে............।
লিওনেল
মেসি তার ক্লাব ক্যারিয়ারে অনেক অনেক ট্রফি জিতেছেন আর তার ক্লাব কেরিয়ারও অনেক সমৃদ্ধ।
একজন ফুটবলার কোন একটা ক্লাবের হয়ে ৫টা লা-লিগা, ৩টা চ্যাম্পিয়ন লিগ ৫টা বেলন্ডিওর জেতাটা মুখের কথা না, তার ড্রিবলিং এবং বা পায়ের কারুকাজ দেখলে যে
কোন ফুটবল প্রেমীই আচ্ছন্নও হবে। তার নমনীয়তা এবং শান্তশিষ্ট ব্যাবহারের জন্য ও সে বিখ্যাত।
কিন্তু খটকাটা লাগে যখন এই মেসিই তার দেশের ফুটবলের জন্য মাঠে নামে, হ্যাঁ মেসি আর্জেন্টিনার হয়ে বিশ্বকাপে রানার আপ হইছে আবার কোপা অ্যামেরিকাতেও কিন্তু প্রশ্নটা হল পৃথিবী কি কখনো রানার আপ কে মনে রাখে? না......সবাই সুধু চ্যাম্পিয়ন কেই মনে রাখে।
আপনি যদি কোন আর্জেন্টিনা সমর্থককে জিগ্যেস করেন যে মেসি তো বার্সেলোনার হয়ে চমৎকার খেলে কিন্তু নিজ দেশের হয়ে এত্ত ফ্লপ ক্যান? তাহলে তার উত্তর হবে সেই দুটি রানার আপ হওয়ার গল্প আর অবশই ব্রাজিলের বিপক্ষে একটা ম্যাচে হ্যাট্রিক করেছিল সেই গল্প, কিন্তু কোন ট্রফি জেতার গল্প আপনি তাদের থেকে পাবেন না।
প্রস্নটা না আমার ও.........যে মেসি ক্লাবের হয়ে এত্ত সফল সেই মেসিই কেন নিজ দেশের হয়ে বার বার বেরথ? প্রশ্নটা আরও কঠিন হয় যখন আগুয়েরও,হিগুয়েন,ডি-মারিয়া,মাচেরানোর মতো সুপার স্টার রা তার সাথে খেলে। এই প্রশ্নের উত্তর হয়তোবা খোদ মেসিই ভালো বলতে পারবেন।
কিন্তু হঠাৎই গত কিছুদিন ধরে খেয়াল করছি আর্জেন্টিনা খারাপ করলেই হিগুয়েনের দোষ আর ভালো করলেই মেসি!!! এমনকি একটা গোলে এসিস্ট করলেও মেসির ছবি হেডলাইন আর হারলেই শুধু হিগুয়েনের গুষ্টি উদ্ধার করা হয়। যাইহোক বিষয়টা এখনও মাথার উপর দিয়ে যাচ্ছে।
ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো.........সেও তার ক্লাবের প্রান ভোমরা, গত ছয় মৌসুম লা-লিগায় কমপক্ষে ৩০ টা করে গোলের রেকর্ড করে সেটা সে বুঝিয়েও দিছেন। কিন্তু খেলার পাশাপাশি সে বেফাঁস সব মন্তব্য বা কর্ম ক্যান্ডেও অনেক সময় সংবাদের শিরোনাম হয়েছেন। যেমন “আমিই সেরা তাই
সবাই আমাকে হিংসা করে” আরও অনেক কিছু।
২০০৯
সালের ২৬ জুলাই রেকর্ড ট্রান্সফারে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড থেকে রিয়াল মাদ্রিদে যোগ
দেন তিনি। আর সে সময় ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের ম্যানেজার ছিলেন সের
অ্যালেক্স ফারগুসন,আর তার হাতেই মুলুত আজকের রোনালদোর রোনালদো হয়ে ওঠা।
ক্লাব
ক্যারিয়ারে ৩ টা লা-লিগা ২ টা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ৩টা বেলন্ডিওর সহ আরও অসংখ্য ট্রফি তিনি জিতেছেন।
ক্লাব
ক্যারিয়ারের মতো নিজ দেশ পর্তুগালের হয়েও তার রেকর্ড বেশ সমৃদ্ধ, ২০১৪ বিশ্বকাপের
কোয়ালিফায়ার রাউন্ডের শেষ ম্যাচে সুইডেনের সাথে ৩ গোল করে একাই পর্তুগালকে
বিশ্বকাপে তোলেন, আর সেই ম্যাচটায় পর্তুগালকে কমপক্ষে ৩-০ বেবধানে জিততে হত আর সেই ৩টা গোলী রোনালদো করেছিলেন।
সর্ব
শেষ ২০১৬ সালের ইউরো তে ফ্রান্সকে হারিয়ে পর্তুগাল চ্যাম্পিয়ন হয় রোনালদোর নেতৃত্বে আর এটাই একমাত্র পর্তুগালের কোন
বৈশ্বিক শিরোপা যদিও ফাইনাল ম্যাচে সে আঘাত পেয়ে মাঠের বাইরে ছিটকে যায় কিন্তু তার
অবদান ছিল অনস্বীকার্য। যদিও পর্তুগাল দলে তার সাথে আগুয়েরও,হিগুয়েন,ডি-মারিয়া,মাচেরানোর মতো সুপার স্টারদের নাম নেই কিন্তু নানি,পেপে দেরও ভালো পরিচিতি আছে।
তবে
এটা সত্যিই স্বীকার করতে হয় যে আজ মেসি রোনালদোর মতো ফুটবলার আছে জন্যই ফুটবল এত
সুন্দর আর এত প্রতিদ্বন্দ্বিতা, আর আমার মনে হয় পৃথিবীর প্রত্যেকটা ফুটবল্প্রেমিই তাদের
এই দ্বৈরথ উপভোগ করেন এবং বিনোদিত হয়।
একবার
ভাবুনতো পৃথিবীতে মেসি বা রোনালদোর মতো ফুটবলার নেই তাহলে সাধারণ ফুটবল প্রেমিরা কাদেরকে
নিয়ে এত গলা ফাটাবেন??
পরিশেষে
বেক্তিগত ভাবে বলতে পারি যে মেসি সত্যিই অসাধারন তার ড্রিবলিং এবং বা-পায়ের
কারুকাজের জন্য কিন্তু এই মুহূর্তে পৃথিবীর স্মার্ট স্টাইলিশ ফুটবলারটি ক্রিস্টিয়ানো
রোনালদো।।
No comments:
Post a Comment
Thanks for your comment