Sunday, 3 June 2018

পুলিশ প্রশাসন বনাম সাধারণ জনগণ।


আপনি সরকারি বাহিনীর কর্মচারী
এই দেশে আপনার জন্যে অনেক কিছুই আছে, কিন্তু আমার মত সাধারণ নাগরিকের পাওয়ার মত কিছুই নেই

আজ আপনি থাকার জন্য সরকারী বাসা পেয়েছেন, চলার জন্য সরকারী গাড়ি পেয়েছেন, এমনকি খাওয়ার জন্যেও আপনার চিন্তা করতে হয় না। কারন মাসের শুরুতেই আপনার বাসা সাধারণ জনগণের কষ্টের টাকার রেশন চলে যায়।
আজ আপনার সন্তান দেশের নাম করা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিনা বেতনে পড়ালেখা করে, আর সেটাও আমার মত সাধারণ জনগণের পয়সায়

কিন্তু আপনে কি জানেন, এই সাধারণ মানুষ গুলো কেন আপনাদের এত ভাল রাখার চেষ্টা করছে?
কারন তারা বিশ্বাস করে, আপনাদের প্রচেষ্টায় তারা এই স্বাধীন দেশে সুন্দর ভাবে জীবন যাপন করবে। আর আপনারা তাদের জান ও মালের নিরাপত্তা দিবেন।

কিন্তু আপনি কি পেরেছেন আপনার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে?
আপনার দায়িত্ব সঠিক ভাবে পালন করতে?

একটা সময় ছিল যখন মানুষ চোর ডাকাতদের ভয় পেত, আর বিশ্বাস করতো যে পুলিশ প্রশাসন তাদেরকে রক্ষা করবে।

কিন্তু এখন?
এখন মানুষ চোর ডাকাতদের সাথে পুলিশ কেও ভয় পায়!

কারন!
আমি বিশ্বাস করতে পারি না যখন শুনি একজন সহজ সরল স্কুল,কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রের ব্যাগে পুলিশ নিজে মাদক ঢুকিয়ে তার কাছে টাকা দাবি করে!!

আমি হতবিহব্বল হয়ে যাই যাই যখন শুনি দাবীকৃত চাদা না পেয়ে পুলিশ সাধারণ জনগণকে মারধোর করছে!

আমি বিশ্বাস হারিয়ে ফেলি যখন দেখি কোন পুলিশ প্রশাসন নিজের আক্রোশ মেটাতে বা টাকার বিনিময়ে একজন নিরপরাধ মানুষকে এনকাউন্টারে নামে গুলি করে মারে!!

আমি বিশ্বাস করবো কাকে?
কার কাছে আমার জান মালের নিরাপত্তা চাইবো?

একজন মানুষ কোন ক্ষতির সম্মুখীন হলে প্রশাসনের কাছে যেতে ভয় পায়! 
কারন তারা বিশ্বাস করতে শুরু করেছে যে প্রশাসন তাদের হেফাজত করবে না এমনকি প্রশাসন দ্বারা আরও বেশী হেনস্থা হওয়ার সম্ভাবনা আছে!

আজ অনেক মেধাবি ছেলে মেয়েদের বলতে শুনি তারা আর এই দেশে থাকতে চায় না। কারন তারা আজ নিজেদের নিরাপদ মনে করে না।
কিন্তু আমি জানি এই মেধাবী ছেলে মেয়ে গুলোই একদিন এই সোনার বাংলাকে এগিয়ে নিতে পারবে।

কিন্তু না! 
যেখানে নিজের নিরাপত্তা নেই সেখানে কীভাবে দেশকে নিয়ে ভাববে তারা?

অথচ একবার ভাবুন, সকালে বাবার কাছে টাকা চেয়ে একজন ছাত্র যখন তার বিশ্ববিদ্যালয়য়ের দিকে যায়, আর কিছুক্ষণ পর বাবার কাছে ফোন আসে, আপনার ছেলে মাদক সহ পুলিশের বা প্রশাসনের হাতে আটক!! 
তখন আপনি কি করবেন বা আপনার পরিবার? 
যেখানে সবাই জানে ছেলেটা অনেক মেধাবি এবং কোন দিন একটা সিগারেটেও ফুক দেয় নি? 

হ্যাঁ আপনার কিছু করার নাই কারন আমি, আপনি সাধারণ মানুষ আর তারা আমার আপনার টাকায় চলা লাইসেন্স কৃত মানুষ!!!

আর সেই সময়টাতেই এই সোনার বাংলা ছেড়ে অন্য কোথাও চলে যায় অনেক মেধাবি মুখ! 
কিন্তু তারাই পারতো এই ঘুনে ধরা সমাজটাকে মাথা উঁচু করে দাড় করাতে। 
কিন্তু তাদেরকে এই সমাজ আর দেশকে নিয়ে ভাব্বার সুযোগ দেওয়া হয়নি বা সুযোগ পায়নি। 

শুধু মাত্র গুটি কয়েক পুলিশ প্রশাসনের জন্য আজ অনেক ছেলে মেয়ে তাদের স্বপ্ন ভেঙ্গে দিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে এই সোনার দেশকে বিদায় জানায়। 
আর যারা পারে না তারা চলে যায় অন্ধকার পথে। কারন কথায় আছে, "বাঘে ধরলে এক ঘা, পুলিশে ধরলে ১৮ ঘা"



Saturday, 26 May 2018

Relationship between Doctor and Engineer.


Doctor or Engineer?
If I first ask you this question!! 
What will be your answer?

In this world, this two profession is highly demand. 
If you ask a child, what do they want to be in the future? 
I am sure they will answer these two. And why not? This two profession is more attractive than others. (Not disrespect other profession).

Doctors save lives of peoples, so that profession is much honorable than engineer, There is no doubt and they deserve their honor for their fidelity and caring.

But Engineers?  
Engineers can make your dreams.
Look at today's world, Technology touches all the sectors, our life has become very easy, enjoyable and safe by using technology, and all the creation by engineers.

So there is no chance to take someone narrow, so in that case the next generation will be driven to these two site, no doubt.


But how much understanding a couple relationship between doctor and engineer?
Many people have said that the relation does not lasting if the profession is not same, specially doctors and engineers.

Because these two profession is equally important but they are completely different type, cause a medical student has to memorize everything, and this is their method. 
Other hand an Engineering students have nothing to memorize (Except some of non-engineering subjects).  Their main thing is understanding and work with creativity from their self.

So they have different mentality since their student life. And this effects is in their relationship/married life.
There are many arguments!!
Who is best?
Who is important?
Who is more supreme in their society?
And to the end many controversy!!

I did not believe when I first heard it, even I still do not believe that they cannot be good couples.

But I believe that sometimes there may be such problems, because I have seen one of my brother and his wife, who have had a quarrel with their professions after their three-year married life. 
Their understanding of all other things is very good and romantic also, but when they talk about their professions, they cannot be same!!

If they start talking about their profession or work, they defend themselves on their own way, and the problem is here because a doctor thinking power does not correspond to an engineer in general. 
Likewise, engineers cannot match the doctor things.

And that is why many people says that if they do not have the same profession, then there is trouble in married life.

By the way, I'm not experienced about this topic, I just released the sound of my mind, and that does not mean that if the profession is different
Then do not be happy in a married life.

Even there are a lot of people who are happier in their married life in different professions. 

And best wishes for all the couples, whether it's same or different professions. 

Wednesday, 10 January 2018

একজন ওমর ফারুক

ময়টা ঠিক মনে নেই, তবে ২০০২-৩ এর দিকে হবে। বডিং এ নতুন একজন পিচ্ছি 
এসেছে, মোটামুটি শান্তশিষ্ট বোঝা যায়, শ্যাম বর্ণ চেহারার মদ্ধে একটা মায়াবি ভাব 
আছে।
এ আর নতুন কি? কত ছেলেই তো আসে এখানে, কেও এই পরিবেশে মানিয়ে নেয়  
আর কেওবা আবার পড়িবার পরিজন ছাড়া কিছু দিন কান্নাকাটি করে ঘরে ফিরে যায়।
এতক্ষণ যেই ছেলেটার কথা বলছি নাম তার ওমর ফারুক

আর জায়গাটা পাবনা জেলার প্রান কেন্দ্রে অবস্থিত “পাবনা ইসলামিয়া ইয়াতিমখানা” 
হ্যাঁ ইয়াতিমখানা!! ঠিকই পড়েছেন।

অল্প কিছুদিনের মধ্যেই ছেলেটা তার ব্যবহারে চলাফেরা আর আচার আচারন দিয়ে 
সবার মন জয় করে নিল, মানে সবার মধ্যমণি আরকি! ছেলেটা ছাত্র হিসেবেও খারাপ 
না। আর ক্লাস ফাইভে বৃত্তি পেয়ে সেটার প্রমাণ ও রাখলো

বছর যায় বছর আসে কিন্তু ছেলেটার মধ্যে খুব বেশী পরিবর্তন নেই! তবে হ্যাঁ দিন দিন 
তার ফ্যান ফলোয়ার যেন বৃদ্ধি পাচ্ছিলো।

আর বারবেই বা না কেন? কোথায় নেই সে?
দিনে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ,সবার সাথে হাসি মুখে কথা, ছোটদের স্নেহ আর বড়দের 
সন্মান, সময়মত পড়ালেখা, বিকেলে খেলাধুলা, এমনকি মাদরাসার সকল প্রকার 
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেও সে! হোক সেটা নাটক কবিতা আবৃতি বা কোরআন তেলয়াত। 
তার গজলের সুর এখনো আমার কানে ভাসছে।

কারো কোন বিন্দু মাত্র অভিযোগ ছিল না তার নামে, হোক সেটা শিক্ষক, বন্ধু বা 
মাদরাসার কর্মচারী

এভাবেই এস এস সি (দাখিল) পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগ থেকে সর্বোচ্চ ফলাফল অর্জন 
করে কাদিরাবাদ ক্যান্টনমেন্ট স্যাপার কলেজ, নাটোরএ ভর্তি হয় আর এখানেও সে তার অধ্যবসায় বজায় রেখে (এইচ এস সি) তেও সর্বোচ্চ ফলাফল অর্জন করে

এইচ এস সি পাশ করে সে যখন মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের “Criminology and Police Science” ( পুলিশ এবং অপরাধ বিজ্ঞানবিভাগে ভর্তি হয়

আর তার স্বপ্ন যেন আকাশের মত বড় হতে থাকলো একদিন মস্ত বড় সৎ পুলিশ অফিসার হয়ে সমাজের অপরাধীদের মেরুদণ্ড ভেঙ্গে দিবে

এতদিন নিজের পড়ালেখা নিয়ে ব্যস্ত থাকায় পরিবারের খেয়াল রাখা হত না কিন্তু 
এখনতো কিছু করা যায়।
বাসায় ছোট বোন, ছোট ভাই আর বড় বোনের পিচ্চি গুলো এখন যে ভাইয়া আর 
মামার কাছে আবদার করা শিখে গেছে আর সেও টিউশনি করিয়ে নিজের খরচ আর 
পরিবারের ছোট ছোট আবদার গুলো রাখতে পারে।
আলহামদুলিল্লাহ্‌ জীবনটা এয়াতিম খানায় কাটলেও এখন তো স্বপ্ন দেখাই 
যায়...............।।


মাঝে মাঝে পিচ্চি বোনটাকে অনেক বেশী দেখতে ইচ্ছে হয় আর বাড়িতেও বেশী 
যাওয়ার সময় হয় না, তাই অনেক কিছু ভেবে মনে হল বোনটাকে নিজের কাছে 
আনলে ক্যামন হয়? সবসময় চোখের সামনে থাকবে আর নিজের হাতে পড়াশোনাও 
করানো যাবে।
যেই ভাবা সেই কাজ......পিচ্চি বোনটা এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশেই ভাল একটা স্কুলে 
পরে, ক্লাস নাইনে

দিন শেষে রবিন্দ্রনাথ ঠাকুরের উক্তিটা মনে পরে যায় তোমার প্রজাপতির পাখা আমার আকাশ-চাওয়া মুগ্ধ চোখের রঙিন স্বপন মাখা । তোমার চাঁদের আলোয় মিলায় আমার দুঃখ-সুখের সকল অবসান”।
ওমর ফারুক এখন বলতেই পারে, অনেক কষ্টের পর সুখের সূর্য এখন আমার আকাশে………স্বপ্ন গুলো এখন আকাশ ছাড়িয়ে যাওয়ার পালা।।


নভেম্বারের ১২ তারিখ সকাল
প্রতিদিনের মত আজো ঝাপসা চোখে দু পায়ে ভর দিয়ে কধের উপর পাঁথরের মত 
বোঝা নিয়ে ছাত্রের বাসার দিকে ওমর ফারুক।
এ বোঝা যে চোখে দেখা যায় না, শুধু অনুভব করা যায়! আর এ অনুভবের ক্ষমতা 
সবার নাই।

এ যেন এক রবোটিক জীবন! প্রোগ্রামিঙের লুপের মত ঘুরছে! সারাদিন ক্লাস আর 
পড়াশুনা ছাড়া সবসময় টিউশনি করিয়ে দারিদ্রতার সাথে যুদ্ধ কিন্তু ওমর ফারুকের 
বিশ্বাস ছিলো এই লুপ একদিন ব্রেক হবেই আর সেটা দারিদ্র্যতার সাথে যুদ্ধ করেই।

সকাল নয়টার আগেই ওমর ফারুক তার ছাত্রের বাসায় হাজির, যথারীতি পরানো শুরু 
হল, কিন্তু কিছু সময় পর হঠাৎ- সে সেন্স লেস হয়ে মেঝেতে পরে যায়। প্রায় সাথে 
সাথেই ছাত্রের গার্জিয়ানরা হাসপাতালে নিয়ে যায় তাকে

টাঙ্গাইল হাসপাতালের কর্তব্যরত ডাক্তার কি সব ভারি ভারি কথা বলতে লাগলেন
রোগীর ব্রেইন স্টক হয়েছে, এটা ওটা নিয়ে নানান কথাকিন্তু তার মাঝে এই টুকো বোঝা গেল যে ওমর ফারুক আর পৃথিবীতে নেই...!!! 

কিছুক্ষণ পর ডাক্তার ফর্মালিটি মেইনটেইন করে যানালেন রোগী হাসপাতালে আনার 
পথেই মারা গেছেন আর তার কারন ব্রেইন স্ট্রোক!!!

এটা কিভাবে সম্ভব???
যে ছেলেটা রাতেও রুমমেটদের সাথে আড্ডা দিল আর সে কিনা………!!!
যে দারিদ্র্যতার সাথে সারা জীবন যুদ্ধ করে মাত্রই আশার আলো দেখছিল আর তার 
জীবনের লুপ কিনা যুদ্ধতেই থেমে গেল???

আকাশ সমান স্বপ্ন গুলো এখনো তরতাজা কিন্তু স্বপ্ন সারথির নিথর দেহটি পরে আছে হাসপাতালের বেডে

বিখ্যাত লেখক/ কবি ‘জর্জ মুর’ বলেছিলেন  “Reality can destroy the dream, why Shouldn’t the dream destroy the reality?”

সত্যিই বাস্তবতার কাছে আকাশ সমান স্বপ্নও ফিকে হয়ে যায়।

রাত ১০ টা পার হতে চলল কিন্তু একটা ছোট্ট গ্রামের মানুষের চোখে ঘুম নেই কারন টাঙ্গাইল থেকে তাদের সবার আদরের ওমর ফারুক আসছে
গ্রামের মানুষের সাথে হাজির হয়েছে কিছু হতভাগা বন্ধু যারা সবাই তাদের প্রান প্রিও বন্ধুর জন্য অপেক্ষমাণ………।।

এখন কে ছোট বোনটাকে হাতে ধরে পড়াবে? আর তার খরচি বা বহন করবে কে?
পরিবারে ছোট ছোট আবদার গুলো কে মিটাবে?
কে পুলিশ হয়ে সমাজ পরিবর্তনের আশা দেখবে?
আর কেই-বা এ যুদ্ধ ক্ষেত্রের হাল ধরবে?
এত এত প্রশ্নের উত্তর যার কাছে সে যে কোন কথাই বলছে না!!

সপ্ন দেখতেই সেটা নিভে যায়, সাথে নিভে যায় একটা পড়িবারের আশা, শূন্য হয়ে যায় মায়ের কোল, হারিয়ে যায় পিচ্চি বোনটার ভাই আর বন্ধু মহলের আইকনিক ওমর ফারুক………………।।

সবশেষে টি এইচ হাকসলির’ একটা কথা মনে পরে যায় “জীবনের মহৎ পরিনতি অভিজ্ঞতায় নয় – কর্মে”
হ্যাঁ ওমর ফারুক হয়তোবা আমাদের মাঝে নেই কিন্তু তার প্রতিটা কর্ম আমাদের স্মরণ করে দেয় একজন বন্ধু হারানোর বেদনা.........।।